আলিপুরদুয়ার | ৩১ মে, ২০২৫
রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা—রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষকে কেন আমন্ত্রণ জানানো হল না কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কলকাতার সভায়? দিলীপ ঘোষ নিজেই জানিয়েছেন, তাঁর কাছে কোনও আমন্ত্রণ পৌঁছায়নি। অথচ রাজ্য কমিটির সাধারণ সদস্যদের পর্যন্ত ডাক পাঠানো হয়েছে। তাহলে দিলীপ ঘোষ এই তালিকার বাইরে কী করে?
দিলীপ ঘোষের বক্তব্য কী?
দিলীপ ঘোষ বলেন, “আমি তো এখন কোনও পদে নেই। হয়তো সেই কারণেই ডাক পাইনি।” যদিও তিনি রাজ্য বিজেপির কোর কমিটির সদস্য এবং প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি— এই পদমর্যাদা থেকেই তাঁর উপস্থিতি প্রত্যাশিত ছিল।
রাজ্য বিজেপির ব্যাখ্যা
রাজ্য বিজেপির একাংশের মতে, দিলীপ ঘোষকে সভায় না ডাকার সিদ্ধান্তটি “সম্মানের” জায়গা থেকেই নেওয়া হয়েছে। নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে হাজার হাজার কর্মীর উপস্থিতিতে কেউ আবেগপ্রবণ হয়ে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করে বসলে দলের অস্বস্তি বাড়তে পারে। সেজন্যই তাঁকে এই কর্মসূচি থেকে দূরে রাখা হয়েছে বলে সূত্রের দাবি।
দিঘা বিতর্ক এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা
ঘটনার সূত্রপাত দিঘায় জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধন ঘিরে। সেখানে উপস্থিত ছিলেন দিলীপ ঘোষ। তারপর সংবাদমাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশংসা করে তিনি বলেছিলেন, “জগন্নাথ মন্দির বানিয়ে মমতা হিন্দু জাগরণের কাজই করেছেন।” এমনকি দুর্নীতির প্রসঙ্গে তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে ক্লিনচিটও দেন। বিজেপির একাংশের মতে, দিলীপ ঘোষের এই মন্তব্য দল ও সংঘের অনেকেরই অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তৃণমূলের সঙ্গে ‘ঘনিষ্ঠতা’ জল্পনা
দিলীপ ঘোষের সাম্প্রতিক মন্তব্যের জেরে তৃণমূলপন্থী হওয়ার অভিযোগ তুলেছে বিজেপির একাংশ। এমনকি আরএসএসের তরফেও এই ইস্যু নিয়ে ‘উপযুক্ত মহলে পরামর্শ’ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে বলেও খবর।
অতীতেও বিক্ষোভের মুখে পড়েছেন
দিলীপ ঘোষ যখন দিঘা থেকে ফিরছিলেন, তখন কোলাঘাটে বিজেপি কর্মীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন। সেখানে তাঁর প্রস্তাবিত চা-চক্র বাতিল হয়ে যায়। এই ঘটনার পরে আরও চড়া হয় দিলীপ ঘোষের সুর।
রাজ্য সভাপতির অবস্থান
বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার স্পষ্ট জানিয়েছেন, “দিলীপদা আমাদের নেতা। তবে তিনি যেহেতু সর্বভারতীয় সহ-সভাপতির পদে ছিলেন, তাই তাঁর বিষয়ে সিদ্ধান্ত কেন্দ্রীয় স্তর থেকেই হবে।”
উপসংহার:
দলীয় রাজনীতির সমীকরণ, মতপার্থক্য, এবং দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি সৌজন্যমূলক বক্তব্য—সব মিলিয়ে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতার সভা থেকে দিলীপ ঘোষকে বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে বিতর্ক আরও ঘনীভূত হচ্ছে। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এটি নিছক প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত নয়, বরং দলের অভ্যন্তরীণ কৌশলেরই বহিঃপ্রকাশ।
আরও আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের ওয়েবসাইটে।
নিয়মিত বাংলা সংবাদের আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন