নিজস্ব সংবাদদাতা – দীর্ঘদিনের জটিলতা কাটিয়ে অবশেষে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতার বসানোর জন্য জমি হস্তান্তরের ছাড়পত্র দিল নবান্ন। কেন্দ্র-রাজ্য সরকারের টানাপোড়েন, রাজনৈতিক বিরোধিতা এবং প্রশাসনিক জটিলতার পর এই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হল। সীমান্তে BSF-এর কার্যকারিতা বাড়াতে এবং অনুপ্রবেশ রোধে এই পদক্ষেপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন প্রশাসনিক মহল।
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, মোট ৬৮০ একর জমির মধ্যে ৩২৪ একর জমি BSF ইতিমধ্যেই পেয়েছে। বাকি ৩৫৬ একর জমি নিয়ে দীর্ঘ সময় ধরে সমস্যা চলছিল। এবার সেই জমি হস্তান্তরের নির্দেশ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বহু জমিদাতার অ্যাকাউন্টে কেন্দ্র সরকারের তরফে বিপুল পরিমাণ টাকা জমা পড়েছে। দাম এমনই চড়া যে অনেক জমিদাতা চোখ কপালে তুলেছেন।
ধানতলা থানার দত্তফুলিয়া, হাঁসখালি, কৃষ্ণগঞ্জের বিজয়পুর সহ একাধিক এলাকায় জমি অধিগ্রহণ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। এছাড়াও চাপড়া থেকে করিমপুর পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চলে জমি অধিগ্রহণের কাজ চলছে জোরকদমে। চাষিদের দেওয়া হয়েছে বাজারদরের ছয় গুণ পর্যন্ত বেশি টাকা, যা আগ্রহ বাড়িয়েছে।
অঞ্চলের বহু বাসিন্দা জানান, আগে জমির সঠিক দাম না পাওয়ায় কেউই জমি দিতে চাইতেন না। কিন্তু এখন পরিস্থিতি বদলেছে। অনেকে নিজের ইচ্ছেতেই জমি দিচ্ছেন, কারণ এই জমি হস্তান্তরের বিনিময়ে তাঁরা আর্থিকভাবে অনেকটাই লাভবান হচ্ছেন। সেই সঙ্গে সীমান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়ার আশ্বাসও মিলছে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জমি হস্তান্তর নিয়ে যে সমস্যাগুলি এতদিন ধরে চলছিল, তা এবার চূড়ান্তভাবে মিটতে চলেছে। ভূমি ও ভূমি সংস্কারের অতিরিক্ত জেলাশাসক প্রলয় রায় চৌধুরী জানান, বোঝাপড়ার মাধ্যমে দ্রুত এই কাজ সম্পূর্ণ করার চেষ্টা চলছে। BSF নিয়মিত রিভিউ করছে এবং সম্পূর্ণ সহযোগিতা করছে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে। প্রশাসনিক স্তরে আশা করা হচ্ছে, অচিরেই পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে এবং সীমান্তে নিরাপত্তা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করা যাবে।
এই সিদ্ধান্ত শুধুমাত্র সীমান্ত সুরক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয়, এটি এক সামাজিক পরিবর্তনের ইঙ্গিতও—যেখানে সরকার, প্রশাসন ও জনগণ একত্রে কাজ করছে দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে।
আরও আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের ওয়েবসাইটে।
নিয়মিত বাংলা সংবাদের আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন