নিজস্ব সংবাদদাতা – নির্বাচন কমিশনের Special Intensive Revision (SIR) নামে একটি বিশেষ ভোটার যাচাই প্রক্রিয়া পশ্চিমবঙ্গে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বহু বিশ্লেষকের মতে, এই প্রক্রিয়ার আড়ালে বাংলায় কার্যত এনআরসি চালু করার মতো পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে।
কমিশনের নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, যেসব ভোটারের নাম ২০০৩ সালের তালিকায় নেই, তাদের নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র জমা দিতে হবে। সঙ্গে, জন্মস্থান সংক্রান্ত স্বঘোষণা জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক। এতে বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে রাজ্যের দরিদ্র ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মধ্যে।
নির্বাচন কমিশনের মতে, জন্ম সনদ বাধ্যতামূলক নয় এবং অন্যান্য ১০টি নথি গ্রহণযোগ্য হবে। কিন্তু, অনেকেই মনে করছেন এই বিষয়টি সঠিকভাবে প্রচার না হওয়ায় বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে যারা জন্ম সনদ রাখতে পারেননি—যেমন গ্রামীণ বা দরিদ্র পরিবার—তাদের পক্ষে এই প্রমাণ জোগাড় করা কঠিন।
বিরোধী দলগুলি ইতিমধ্যেই এই উদ্যোগকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেই আখ্যা দিয়েছে। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর অভিযোগ, এই পদ্ধতি বিজেপি সরকারের ভোটার তালিকা ম্যানিপুলেশনেরই অংশ। তাদের দাবি, এর ফলে বহু বৈধ নাগরিকের নাম তালিকা থেকে বাদ যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, যেহেতু পশ্চিমবঙ্গে CAA ও NRC নিয়ে অতীতে ব্যাপক আন্দোলন হয়েছে, তাই এমন পদক্ষেপ নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে। তারা আরও বলছেন, ভোটার তালিকার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার উদ্যোগ যথার্থ হলেও, তার বাস্তবায়নে কোনোভাবেই যেন বৈষম্যমূলক মনোভাব কাজ না করে—সেটিই এখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
প্রচারের অভাব ও তথ্যের অভ্যন্তরীণ অসংগতি থেকে উদ্ভূত বিভ্রান্তি রোধ করা না গেলে, প্রকৃত ভোটাররাও তালিকা থেকে বাদ পড়তে পারেন। যা গণতন্ত্রের ভিত্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে।
আরও আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের ওয়েবসাইটে।
নিয়মিত বাংলা সংবাদের আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন