নিজস্ব সংবাদদাতা- করোনার ছোবল আবার মাথাচাড়া দিচ্ছে দেশজুড়ে, তার মধ্যেই উত্তরবঙ্গে নতুন করে উদ্বেগ বাড়াচ্ছে এক পুরনো, কিন্তু ভয়ঙ্কর রোগ—অ্যানথ্রাক্স। কোচবিহারের দিনহাটা মহকুমার একটি প্রত্যন্ত গ্রামে সংক্রমিত ছাগলের মাংস খেয়ে একই পরিবারের তিনজনের মৃত্যুর পর চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ঘটনার পর বনাঞ্চল ঘেঁষা গ্রামগুলোতে জারি হয়েছে চরম সতর্কতা।
অ্যানথ্রাক্স মূলত ‘ব্যাসিলাস অ্যানথ্রাসিস’ নামের ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট একটি মারাত্মক সংক্রামক রোগ, যা সাধারণত তৃণভোজী পশুদের আক্রান্ত করে। পশুর শরীর থেকে এই জীবাণু মানুষের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়তে পারে। সংক্রমিত পশুর মাংস, চামড়া বা পশমের সংস্পর্শে এলেই ঝুঁকি বাড়ে।
১৯৯৩ ও ২০২০ সালে এই রোগ জলদাপাড়া ও আশপাশের জঙ্গলে একাধিক বন্যপ্রাণীর মৃত্যুর কারণ হয়েছিল, যার মধ্যে ছিল একাধিক একশৃঙ্গ গন্ডারও। এবারও সেই আশঙ্কা থেকেই সতর্ক হয়েছে বন দপ্তর।
জলপাইগুড়ি বন বিভাগের অধীনে থাকা গরুমারা ও চাপরামারী জাতীয় উদ্যানের প্রাণীদের উপরে নজরদারি শুরু হয়েছে। গরুমারার ৫৫টি একশৃঙ্গ গন্ডার রাখা হয়েছে বিশেষ পর্যবেক্ষণে। বন দপ্তরের আধিকারিক রাজীব দে জানান, “সংক্রমণ গৃহপালিত পশু থেকে বন্যপ্রাণীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে। আবার বন্যপ্রাণীর মাধ্যমেও মানুষের মধ্যে সংক্রমণ ঘটতে পারে। তাই দু’দিকেই নজর রাখছি।”
বন্যপ্রাণ সংরক্ষণে বাড়ানো হয়েছে চিকিৎসা ও ভ্যাকসিনেশন কর্মসূচি। বন দপ্তরের কুনকি হাতিগুলোকেও ইতিমধ্যে টিকাকরণ করা হয়েছে। আপাতত তারা নিরাপদ থাকলেও, গোটা অঞ্চলে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে দ্রুত।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে এই সংক্রমণ ভয়াবহ রূপ নিতে পারে, এবং উত্তরবঙ্গের জীববৈচিত্র্যের উপর তা ফেলতে পারে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব।
আরও আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের ওয়েবসাইটে।
নিয়মিত বাংলা সংবাদের আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন