নিজস্ব সংবাদদাতা – সোমবার থেকে শুরু হতে চলা বাদল অধিবেশন শুধুই নিয়মিত সাংসদীয় কর্মসূচি নয়—এটি মোদী সরকারের সামনে এক কঠিন রাজনৈতিক ও কৌশলগত পরীক্ষাও বটে। বিদেশনীতি থেকে শুরু করে নিরাপত্তা ও প্রশাসনিক স্বচ্ছতা—বিরোধীরা ইতোমধ্যেই একাধিক ইস্যুতে মোদী সরকারকে চাপে রাখার পরিকল্পনা করে ফেলেছে।
বিশেষ করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পাকিস্তান সংক্রান্ত বিতর্কিত মন্তব্য, পহেলগাম হামলার নিরাপত্তা ব্যর্থতা, বিহারে ভোটার তালিকার বিশেষ সংশোধনী প্রক্রিয়া এবং আহমেদাবাদে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ এয়ার ইন্ডিয়া দুর্ঘটনা—এসব ইস্যুতে সরকারের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন তুলতে যাচ্ছে বিরোধীরা।
প্রথম দিনই প্রধানমন্ত্রী মোদী বক্তব্য রাখবেন এবং সরকার এই অধিবেশনে যেসব বিল আনতে চায়, তার রূপরেখা তুলে ধরবেন। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বিরোধীদের আক্রমণের মূল লক্ষ্য থাকবে প্রতিরক্ষা এবং পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক দায়-দায়িত্ব স্থির করা।
সরকার পক্ষ দাবি করছে, তারা আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক মঞ্চে পাকিস্তান-বিরোধী অবস্থানকে সফলভাবে উপস্থাপন করেছে। আইনমন্ত্রী কিরেন রিজিজু জানিয়েছেন, ‘অপারেশন সিঁদুর’ সহ সব বিষয়ে সরকার আলোচনায় রাজি, যদিও ট্রাম্পের বক্তব্য নিয়ে এখনও তারা সংবেদনশীল অবস্থান নিয়েছে।
বিরোধীদের আরেকটি বড় অস্ত্র হচ্ছে এয়ার ইন্ডিয়া বিমান দুর্ঘটনা, যাতে প্রাণ হারিয়েছে ২৬০ জন। যদিও আন্তর্জাতিক তদন্তে পাইলট ত্রুটিকেই দায়ী করা হয়েছে, বিরোধীরা কেন্দ্রীয় সরকারের জবাবদিহির দাবি তুলেছে।
এই অধিবেশনে বিচারপতি যশবন্ত বর্মার অভিশংসনের প্রস্তাব একটি বিস্ফোরক রাজনৈতিক ইস্যু হয়ে উঠতে পারে। তাঁর বাড়ি থেকে নগদ টাকা উদ্ধারের ঘটনায় ইতোমধ্যেই ১০০ জন সাংসদের স্বাক্ষর সংগৃহীত হয়েছে।
এছাড়া, অধিবেশনে মণিপুর জিএসটি বিল, কর সংশোধনী বিল, জন বিশ্বাস বিল এবং জাতীয় অ্যান্টি-ডোপিং সংশোধনী বিলসহ মোট ১৭টি বিল আনা হতে পারে।
রাজ্যসভার চেয়ারম্যান জগদীপ ধনখড় সকল পক্ষকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন—আলোচনা হোক, মতপার্থক্য থাকুক, কিন্তু তা যেন কখনও শিষ্টতার সীমা না লঙ্ঘন করে।
আগামী ২১ আগস্ট পর্যন্ত চলা এই অধিবেশন রাজনৈতিক তাপমাত্রা ও প্রশাসনিক জবাবদিহির একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্ব হয়ে উঠবে নিঃসন্দেহে।
আরও আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের ওয়েবসাইটে
নিয়মিত বাংলা সংবাদের আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন