নিজস্ব সংবাদদাতা – পূর্ব বর্ধমানের এক বেসরকারি হাসপাতালে সম্প্রতি এমন এক শিশুর জন্ম হয়েছে, যার শারীরিক গঠন দেখে স্তম্ভিত চিকিৎসক মহল। একটিমাত্র মাথা, কিন্তু শরীর জুড়ে চারটি হাত ও চারটি পা। শুনতে অবিশ্বাস্য লাগলেও, এটিই বাস্তব। শিশুটি জন্মের পর বাঁচানো যায়নি।
এই প্রসবটি ছিল একটি জটিল অস্ত্রোপচারের ফল। আল্ট্রাসোনোগ্রাফিতে আগে থেকেই ধরা পড়েছিল ভ্রূণের অস্বাভাবিক গঠন। অস্ত্রোপচার করেন অভিজ্ঞ গাইনিকোলজিস্ট ডাঃ কৃষ্ণপদ দাশ। তাঁর মতে, এই শিশুর জন্ম না করালে মা’র জীবন বিপন্ন হতে পারত। ফলে চিকিৎসকরা ঝুঁকি না নিয়ে অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেন।
শিশুর বিরল শারীরিক গঠন নিয়ে বিশদ ব্যাখ্যা দেন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ অরুণ সিং। তিনি বলেন, এটি একধরনের যমজ ভ্রূণ যা ‘ক্রেনিওপ্যাগাস’ নামে পরিচিত। এই ধরণের শিশুদের ব্রেইন একটি হলেও শরীরের কিছু অংশ যমজের মতো। এরকম জন্ম পৃথিবীতে খুবই বিরল, প্রতি ২৫ লক্ষে একটি মাত্র দেখা যায়।
আরও এক শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাঃ শুভজিৎ ভট্টাচার্য জানান, চিকিৎসার ইতিহাসে এই ধরনের ঘটনাগুলি হাতে গোনা। তবু মাঝে মাঝে এমন ব্যতিক্রমী ঘটনা ঘটে, যেগুলি মানুষের জন্মপ্রক্রিয়া সম্পর্কেই ভাবতে বাধ্য করে।
এই ঘটনাটি অনেকের স্মৃতিতে টেনে এনেছে মে মাসের আরেক দৃষ্টান্ত। কাটোয়ার মহকুমা হাসপাতালে জন্মেছিল এমন এক শিশু, যার কোমর থেকে নিচের অংশ মাছের লেজের মতো। চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন, শিশুটি ‘মারমেইড সিনড্রোম’-এ আক্রান্ত ছিল। সেই শিশুটিও মারা যায়।
চিকিৎসকরা বলছেন, এই ধরণের জন্মবিকৃতি শুধুই জিনগত নয়—পরিবেশগত ও সামাজিক কারণও আছে। যেমন, নিকট আত্মীয়দের মধ্যে বৈবাহিক সম্পর্ক, গর্ভাবস্থায় চিকিৎসকের অনুমতি ছাড়া এক্সরে করা কিংবা ওষুধ গ্রহণ করা ইত্যাদি বিষয়গুলিও এইরকম বিপর্যয়ের নেপথ্যে থাকতে পারে।
আরও আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের ওয়েবসাইটে।
নিয়মিত বাংলা সংবাদের আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন