কলকাতা | ২৪ মে ২০২৫
মূল্যবৃদ্ধির কঠিন বাজারে যখন সাধারণ মানুষ নাভিশ্বাস উঠছে, ঠিক তখনই বিভিন্ন জেলার পঞ্চায়েত স্তরে অতিরিক্ত কর ও ফি চাপিয়ে দেওয়ার অভিযোগে তোলপাড়। এই পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপ করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর স্পষ্ট নির্দেশ— “বিনা অনুমতিতে পঞ্চায়েত স্তরে কর আরোপ চলবে না।”
নবান্নের কড়া নির্দেশ: কর আরোপে বাধ্যতামূলক অনুমতি
নবান্ন সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত কর সংক্রান্ত বিষয়ে আগেই সুস্পষ্ট নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল। কিন্তু তা না মেনেই বেশ কিছু জেলার পঞ্চায়েত নতুন কর চাপানো শুরু করেছিল।
এই বিষয়ে মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ স্পষ্ট জানিয়েছেন—
“জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি বা গ্রাম পঞ্চায়েত— কেউই আর নিজের মত করে কোনও কর বা ফি চাপাতে পারবে না। আগে রাজ্যের অর্থ দপ্তর বা পঞ্চায়েত দপ্তর থেকে অনুমতি নিতে হবে।”
নতুন ডিজিটাল পদ্ধতি: ‘সহজ সরল’ পোর্টাল
পঞ্চায়েত স্তরে করের লেনদেন স্বচ্ছ ও অনিয়মরোধে রাজ্য সরকার চালু করেছে নতুন পোর্টাল— ‘সহজ সরল’।
এই পোর্টালের মাধ্যমে:
- কর জমা, রসিদ ও হিসাব হবে সম্পূর্ণ ডিজিটালি
- রসিদ হবে শুধুমাত্র সফটওয়্যারের মাধ্যমে, হাতে লেখা রসিদ অবৈধ
- জমি, বাড়ি, মাঠ, নদীর ঘাট ও দরপত্র সংক্রান্ত তথ্যও থাকবে এখানে
এই প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে দেওয়া হয়েছে জেলা পরিষদ, পঞ্চায়েত সমিতি ও গ্রাম পঞ্চায়েত— তিন স্তরেই।
বিডিওদের নজরদারির নির্দেশ
প্রশাসন জানিয়েছে, সমস্ত কর-সংক্রান্ত গাইডলাইন বাস্তবে কতটা মানা হচ্ছে, তার জন্য ব্লক ডেভেলপমেন্ট অফিসারদের (BDO) সক্রিয় নজরদারির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদি কোনও স্তরের পঞ্চায়েত গোপনে কর আদায় করে, তাহলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কেন এই পদক্ষেপ গুরুত্বপূর্ণ?
রাজ্যের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে—
পঞ্চায়েত স্তরের টাকা দিয়ে চলে রাস্তাঘাট, আলো, সাফাই, সামাজিক প্রকল্প সহ নানা উন্নয়নমূলক কাজ। তাই এই টাকার ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা ও নিয়ন্ত্রণ রাখা অত্যন্ত জরুরি।
উপসংহার:
সাধারণ মানুষের উপর অতিরিক্ত বোঝা নয়, বরং স্বচ্ছতা ও নিয়ম মেনে কর আদায়ের পথে হাঁটতে চাইছে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে রাজ্য জুড়ে পঞ্চায়েত কর নিয়ে যে অনিয়ম চলছিল, তা এবার থামবে বলেই মনে করছেন প্রশাসনিক মহল।
নিয়মিত বাংলা সংবাদের আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন