কলকাতা, ১২ মে ২০২৫:পাহাড়প্রেমী বাঙালিদের কাছে অন্যতম জনপ্রিয় গন্তব্য সিকিমে এবার পৌঁছনো আরও সহজ হতে চলেছে। রেলপথে পৌঁছনোর স্বপ্ন এবার বাস্তবের রূপ নিতে চলেছে, কারণ কেন্দ্র সরকার নতুন এক রেলপথের জরিপে অনুমোদন দিয়েছে। ভারতীয় রেলওয়ের তরফে জানানো হয়েছে, সেবক-রংপো রেল প্রকল্পের আওতায় এবার মেল্লি থেকে জোরথাং, লেগশিপ হয়ে ডেন্টাম পর্যন্ত সম্প্রসারিত হবে রেলপথ—যা ভারত-নেপাল সীমান্তের একেবারে কাছাকাছি।
এই প্রকল্পের মাধ্যমে রেল পরিষেবা পৌঁছবে সিকিমের আরও প্রত্যন্ত ও সীমান্তবর্তী এলাকায়। ভারতীয় রেলের উত্তর-পূর্ব শাখাকে এই প্রকল্পের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। অনুমান, পুরো সার্ভে প্রক্রিয়ার খরচ পড়তে পারে প্রায় ২ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা। টার্গেট করা হয়েছে ২০২৭ সালকে, তার মধ্যেই এই রেলপথের নির্মাণ সম্পূর্ণ করার পরিকল্পনা রয়েছে।

দীর্ঘদিনের ভরসা ছিল সড়কপথ
এতদিন পর্যন্ত সিকিমে যেতে পর্যটকদের নির্ভর করতে হতো সড়কপথের উপরে। যদিও পাকিয়ং বিমানবন্দর চালু হওয়ার পর এক আশা জাগিয়েছিল, কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার কারণে বছরের অধিকাংশ সময়ই সেখান থেকে বিমান চলাচল বন্ধ থাকে। ফলে নিউ জলপাইগুড়ি, বাগডোগরা বা শিলিগুড়ি হয়ে সড়কপথেই যেতে হতো রাজ্যটিতে।
পর্যটনে বড় রূপান্তর
রেলের এই নতুন উদ্যোগ শুধুই যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সহজতর করবে না, পাশাপাশি সিকিমের দক্ষিণ ও পশ্চিমাঞ্চলে পর্যটনের উন্নতিতেও বড় ভূমিকা রাখবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সেবক-রংপো প্রকল্পের এই বর্ধিত অংশ ভবিষ্যতে নেপালের সঙ্গে বাণিজ্য এবং সীমান্ত নিরাপত্তার দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।
রেলমন্ত্রীত্বের পরিকল্পনা
রেল মন্ত্রকের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “আমরা চাই দেশের প্রত্যন্ত ও সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিকে মূল রেল যোগাযোগের সঙ্গে যুক্ত করতে। এতে একদিকে যেমন দেশের নিরাপত্তা ও অর্থনীতি মজবুত হবে, তেমনি পর্যটক ও স্থানীয় বাসিন্দারাও উপকৃত হবেন।”
এই রেলপথ বাস্তবায়িত হলে, এক ট্রেন সফরেই শিলিগুড়ি বা এনজেপি থেকে সরাসরি সিকিমের অন্তর্দেশীয় অঞ্চলে যাওয়া সম্ভব হবে। রেল সংযোগ এক নতুন অধ্যায় খুলে দেবে সিকিমের দরজায়।
সব মিলিয়ে, পাহাড়প্রেমীদের কাছে এটি নিঃসন্দেহে এক সুবর্ণ সুযোগ। পরিবহন সুবিধা যেমন উন্নত হবে, তেমনি সিকিমের পর্যটন এবং অর্থনীতিও পাবে নতুন দিশা।
নিয়মিত বাংলা সংবাদের আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন