নয়াদিল্লি, ২০ মে:
এশিয়াজুড়ে ফের ছড়িয়ে পড়ছে কোভিড আতঙ্ক। আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থার প্রতিবেদন অনুযায়ী, হংকং ও সিঙ্গাপুরে হঠাৎ করেই বেড়েছে কোভিড-১৯ আক্রান্তের সংখ্যা। বিষয়টি নিয়ে সেসব দেশের স্বাস্থ্য বিভাগ ইতিমধ্যেই সতর্কতা জারি করেছে। এই পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে ভারতও। কারণ, এখনও তিন বছর আগের মহামারীর ভয়াবহ স্মৃতি ভোলেনি দেশবাসী। এরই মধ্যে মহারাষ্ট্রে দু’জন করোনা আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুর খবর সামনে আসতেই উদ্বেগ ছড়িয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংক্রমণ ও ভারতের উদ্বেগ
হংকং ও সিঙ্গাপুরে সংক্রমণ বৃদ্ধির জেরে ভারতের মধ্যে যে ঘনিষ্ঠ যাতায়াত রয়েছে, তা নিয়ে চিন্তা করছেন বিশেষজ্ঞরা। যদিও ভারতের কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য দফতর এখনই বিশেষ কোনও সতর্কতা বা আতঙ্কের কথা বলেনি, তবে রাজ্য স্তরে চিকিৎসক মহলে ধীরে ধীরে উদ্বেগ বাড়ছে।
মৃত্যু হয়েছে, কিন্তু কোভিড প্রধান কারণ নয়
প্রেস ট্রাস্ট অফ ইন্ডিয়া (PTI) সূত্রে জানা গেছে, মুম্বইয়ের কেইএম হাসপাতালে দুই কোভিড পজিটিভ রোগীর মৃত্যু হয়েছে, যার মধ্যে একজন ১৪ বছরের কিশোর এবং অন্যজন ৫৪ বছর বয়সী এক ব্যক্তি। কিন্তু বিএমসি (বৃহন্মুম্বই মিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশন) জানিয়েছে, আতঙ্কিত হওয়ার কোনও কারণ নেই। কারণ, এই দুই রোগী অন্য গুরুতর অসুস্থতায় ভুগছিলেন। ফলে কোভিডকে সরাসরি মৃত্যুর কারণ বলা ঠিক হবে না।
কে ছিলেন এই দুই রোগী?
১৪ বছর বয়সী কিশোরটি নেফ্রোটিক সিনড্রোমে ভুগছিলেন এবং তাঁর কিডনি কার্যক্ষমতা প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। অপর ৫৪ বছরের পুরুষ রোগী ক্যান্সারের শেষ পর্যায়ে ছিলেন। চিকিৎসকদের মতে, কো-মর্বিডিটি বা সহ-রোগই এই দুইজনের মৃত্যুর মূল কারণ। কোভিড থাকলেও তা ছিল সাইড ইনফেকশন হিসেবে।
মৃত্যুর কারণ নিয়ে হাসপাতালের ব্যাখ্যা
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, এই মৃত্যুগুলি মূলত হয়েছে নেফ্রোটিক সিনড্রোম, হাইপোক্যালসেমিক খিঁচুনি ও ক্যান্সারের কারণে। কোভিড থাকলেও, তা মৃত্যুর কারণ নয়। ফলে সাধারণ মানুষকে অহেতুক আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

ভারতের সাম্প্রতিক কোভিড পরিস্থিতি
স্বাস্থ্য মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে মোট ২৫৭ জন সক্রিয় কোভিড রোগী রয়েছেন। এদের অধিকাংশই হালকা উপসর্গে আক্রান্ত এবং হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই। জনসংখ্যার তুলনায় এই সংখ্যা খুবই নগণ্য।
উপসংহার
বিশ্বের কিছু দেশে কোভিডের প্রভাব আবারও দেখা দিলেও, ভারতের পরিস্থিতি এখন স্থিতিশীল। তবে অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে সতর্ক থাকা জরুরি, যাতে পরিস্থিতি হাতের বাইরে না যায়। সরকারি নির্দেশ ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেই এখনই কোনও বড় বিপদের সম্ভাবনা নেই।
(এই প্রতিবেদনটি স্বাস্থ্যের গুরুত্ব বিবেচনায় তৈরি। সরকার ও চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুসরণ করুন।)
নিয়মিত বাংলা সংবাদের আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন