কলকাতা, ২৬ মে:
রাজ্যবাসীর ঘরে ঘরে রেশন পৌঁছে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শুরু করা ‘দুয়ারে রেশন (Door to Door Ration)’প্রকল্প পশ্চিমবঙ্গে আপাতত চালু থাকছে। তবে অন্যান্য রাজ্যের সরকারগুলো এই ব্যবস্থাকে ধাপে ধাপে বন্ধ করার পথে হাঁটছে। তার মধ্যে অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারের সিদ্ধান্ত রাজ্যবাসীর কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। কারণ একটাই—খরচ।
অন্ধ্রপ্রদেশে বন্ধ হচ্ছে দুয়ারে রেশন ব্যবস্থা
২০ মে অন্ধ্রপ্রদেশ সরকারের মন্ত্রিসভার বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, শুধুমাত্র ৬৫ ঊর্ধ্ব নাগরিক এবং দিব্যাঙ্গদের বাদে আর কারোর ঘরে ঘরে রেশন পৌঁছে দেওয়া হবে না। বাকি গ্রাহকদের নির্ধারিত রেশন দোকান থেকেই চাল-গম সংগ্রহ করতে হবে।
সরকারি হিসেব বলছে, এই পরিষেবার কারণে অন্ধ্র সরকারের কোষাগার থেকে বছরে প্রায় ₹১৮০১ কোটি অতিরিক্ত ব্যয় হচ্ছে। এর মধ্যে গাড়ির অকার্যকর সময়, লজিস্টিক সমস্যা এবং খাদ্যশস্যের লিকেজ বড় চ্যালেঞ্জ। ফলে ১ জুন থেকে অন্ধ্রপ্রদেশে এই পরিষেবা পুরোপুরি বন্ধ হচ্ছে।

পশ্চিমবঙ্গে এখনই বন্ধ নয়, তবে খরচ বিশাল
২০২১ সালে তৃতীয়বার ক্ষমতায় ফিরে, রাজ্যবাসীর সুবিধার্থে এই প্রকল্প চালু করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বর্তমানে প্রতি বছর ₹৪০৮ কোটি অতিরিক্ত খরচ করে রাজ্য সরকার এই প্রকল্প চালাচ্ছে, শুধুমাত্র জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইন (NFSA)-এর আওতায় থাকা চাল-গম বিতরণের জন্য। যদি ‘খাদ্যসাথী’ প্রকল্পকেও ধরা হয়, তবে খরচ আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
ডিলারদের ক্ষোভ ও কমিশন বৃদ্ধির দাবি
অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু জানিয়েছেন, “দেশে একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারই এই সুবিধাকে ধরে রেখেছেন সাধারণ মানুষের কথা ভেবে।”
তবে কমিশন বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে চিঠি লিখেছেন। বর্তমানে প্রতি কুইন্টাল চাল-গম বিতরণে রেশন ডিলাররা পান ₹৯০ কমিশন। তা বাড়িয়ে ₹২০০ করার দাবি উঠেছে।
উপসংহার:
যদিও পশ্চিমবঙ্গে এখনই দুয়ারে রেশন বন্ধ হচ্ছে না, তবে বাড়তি খরচ এবং কমিশন সংক্রান্ত জটিলতা ভবিষ্যতে সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। অন্যদিকে, অন্ধ্রপ্রদেশের সিদ্ধান্ত অন্য রাজ্যগুলিকে এই বিষয়ে ভাবতে বাধ্য করবে, এমনটাই মত বিশেষজ্ঞদের।
নিয়মিত বাংলা সংবাদের আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন