দিল্লিতে ধুলিধোঁয়া ঝড়, শিলাবৃষ্টি ও বজ্রপাতের তাণ্ডব – প্রাণহানি ও ব্যাহত পরিষেবা

Spread the love

নয়াদিল্লি, ২২ মে: প্রবল দাবদাহের পর এক রাশ স্বস্তি নিয়ে এসেছিল বুধবার সন্ধ্যার হঠাৎ বৃষ্টি। তবে সেই স্বস্তি মুহূর্তেই রূপ নেয় তীব্র প্রাকৃতিক দুর্যোগে। রাজধানী দিল্লি ও তার সংলগ্ন অঞ্চলে হঠাৎ শুরু হয় প্রবল ঝড়, বজ্রপাত এবং শিলাবৃষ্টি। তার জেরে বিদ্যুৎ বিপর্যয়, যানজট, বিমানবন্দরে বাধা এবং প্রাণহানির মতো একাধিক মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে।

বুধবার সন্ধ্যায় ঘণ্টায় ৬০-৭০ কিমি বেগে শুরু হয় ধুলিঝড়। রাজধানীর লোধি রোড এলাকায় ঝড়ের দাপটে ভেঙে পড়ে একটি বিদ্যুতের খুঁটি। ঘটনায় মৃত্যু হয় এক প্রতিবন্ধী ব্যক্তির। অন্যদিকে, উত্তর-পূর্ব দিল্লির গোকুলপুরী এলাকায় ঝড়ের সময় এক গাছ ভেঙে পড়ে ২২ বছরের এক তরুণের উপর, ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়।

পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝড় এবং শিলাবৃষ্টির কারণে অন্তত ১১ জন আহত হয়েছেন। কেউ ওভারব্রিজের লোহার অংশ ভেঙে পড়ে জখম হয়েছেন, তো কেউ বহুতলের জানলার কাচ ভেঙে পড়ে গুরুতর আহত।

বিমান পরিষেবায় বিঘ্ন

দুর্যোগের কারণে ব্যাহত হয় দিল্লি ইন্দিরা গান্ধী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিষেবাও। কমপক্ষে ১৩টি বিমান দিল্লিতে নামতে না পেরে অন্যত্র পাঠানো হয়। পিটিআই সূত্রের খবর অনুযায়ী, এর মধ্যে ১২টি বিমান জয়পুর বিমানবন্দরে অবতরণ করে এবং একটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট মুম্বইতে নামানো হয়।

বিদ্যুৎ ও মেট্রো পরিষেবায় প্রভাব

ঝড়ের শুরুতেই রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয় বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থাগুলি। সংস্থার দাবি, মানুষের সুরক্ষার কথা মাথায় রেখেই এই সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, যাতে কোথাও বিদ্যুৎস্পৃষ্টের ঘটনা না ঘটে।

শিলাবৃষ্টি এবং ঝড়ের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দিল্লি মেট্রোর ওভারহেড তারও। ফলে বেশ কিছু সময়ের জন্য মেট্রো পরিষেবায় বিঘ্ন ঘটে, যার ফলে অফিস ফেরত যাত্রীদের চরম ভোগান্তির মুখে পড়তে হয়।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস

আবহাওয়া দফতরের মতে, বুধবার বিকেলে উত্তর দিল্লি থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম দিল্লি পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল উলম্ব মেঘের ঘনঘটা। যার ফলে অল্প সময়ের মধ্যেই ভারী বৃষ্টি হয়। সফদারজংয়ে সন্ধ্যা ৫:৩০ থেকে রাত ৮:৩০ পর্যন্ত মোট ১২.২ মিমি বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে।

দিল্লি পুলিশ নাগরিকদের সতর্ক করে জানায়, সড়কে জল জমে যানজট তৈরি হওয়ায় অত্যন্ত প্রয়োজন না হলে বাইরে না বেরোনোই ভালো। প্রয়োজনে সময় হাতে নিয়ে রওনা দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।


দুর্যোগ কেটে গেলেও সতর্ক থাকার বার্তা দিয়েছে প্রশাসন। এমন পরিস্থিতিতে রাজধানীবাসীর জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগের মোকাবিলা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্বধারা – সত্যের সন্ধানে, আপনার সাথে


বিশ্বধারা - সত্যের সন্ধানে অবিচল,

আপনার বিশ্বস্ত সঙ্গী। পশ্চিমবঙ্গ ও বাইরের নিরপেক্ষ সংবাদে আমরা নিবেদিত। স্বচ্ছতা ও নির্ভুলতাই আমাদের মূল ভিত্তি। আমাদের সাথে থাকুন, সঠিক তথ্য জানুন।

This will close in 11 seconds