নরওয়ে চেস ২০২৫-এ মাত্র ১৮ বছর বয়সী ভারতীয় গ্র্যান্ডমাস্টার ডি. গুকেশ যখন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন ম্যাগনাস কার্লসেনকে হারান, সেই মুহূর্তের একটি ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়। ভিডিওতে দেখা যায়, হারার পর হতাশায় কার্লসেন টেবিলে হাত মেরে প্রতিক্রিয়া দেন। তবে আনন্দের সেই ভিডিওর নিচে যেভাবে বর্ণবিদ্বেষী ও বিদ্বেষমূলক মন্তব্যে ভরে ওঠে, তাতে ক্ষুব্ধ হয়েছেন বহু ভারতীয় ও প্রবাসী ভারতীয়।
বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্য ঘিরে বিতর্ক
একজন NRI (প্রবাসী ভারতীয়) এক্স (X)-এ ক্ষোভ প্রকাশ করে লেখেন:
“@NorwayChess টিকটকে গুকেশকে নিয়ে বর্ণবাদী মন্তব্যে ভরে গেছে কমেন্ট সেকশন। এত অভিযোগের পরও কেন কোনও মডারেশন নেই?”
এই পোস্টের সাথে সংযুক্ত স্ক্রিনশটে দেখা যায় একটি অত্যন্ত আপত্তিকর মন্তব্য:
“Magnus was distracted by the curry scent (sic).”
এমন মন্তব্য হাজার হাজার লাইক পেয়েছে এবং টপ কমেন্টে উঠে এসেছে। বিষয়টি আরও স্পষ্ট করেছে কীভাবে পশ্চিমা প্ল্যাটফর্মগুলোতে ভারতীয়দের নিয়ে বিদ্বেষমূলক আচরণ আজও বিদ্যমান।
Another one. Just see the likes on the racist remark. pic.twitter.com/l1gnaa6Wce
— Meru (@MeruBhaiya) June 2, 2025
সোশ্যাল মিডিয়ায় সাধারণ প্রতিক্রিয়া
ঘটনার পরে সাধারণ ব্যবহারকারীদের প্রতিক্রিয়ায় দেখা যায় তীব্র ক্ষোভ:
- “পশ্চিমারা ভারতীয়দের ঘৃণা করে, এটা নতুন কিছু নয়।”
- “ওরা ভারতের উত্থান সহ্য করতে পারে না।”
- “একজন ভারতীয় যখন শীর্ষে উঠে যায়, তখনই সমস্যা শুরু হয়।”
- “কার্লসেনের আচরণ নিয়ে কেউ কিছু বলছে না, কারণ তিনি পশ্চিমা! দ্বিমুখী মানদণ্ড স্পষ্ট।”
গুকেশের জয়: ইতিহাসের অংশ
রাউন্ড ৬-এ যখন গুকেশ ও কার্লসেন মুখোমুখি হন, শুরুতে গুকেশ কিছুটা পিছিয়ে ছিলেন। কিন্তু কার্লসেনের একটি মারাত্মক ভুলের সুযোগ নিয়ে গুকেশ ম্যাচটি জিতে নেন। এই জয় তাকে বিশ্ব দাবা অঙ্গনে একটি বিশেষ উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছে।
গুকেশের দাদু শঙ্কর রাজেশের প্রতিক্রিয়া
এই বিতর্কের মধ্যেই গুকেশের দাদু শঙ্কর রাজেশ বলেন:
“কার্লসেনের টেবিল মারার বিষয়টি স্বাভাবিক। সেটা আবেগের বহিঃপ্রকাশ। গুকেশ একটা বড় মাইলফলক স্পর্শ করেছে, যেটা আগে হয়নি। এখন আর কোনো চাপ নেই তার ওপর।”
উপসংহার: বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া দরকার
একজন ভারতীয় ক্রীড়াবিদের অসাধারণ অর্জনের আনন্দ উদযাপনের বদলে যখন বর্ণবিদ্বেষী মন্তব্য ছড়ায়, তখন তা শুধুই খেলাকে নয়, গোটা সমাজব্যবস্থাকে প্রশ্নের মুখে ফেলে। এখন সময় এসেছে, আন্তর্জাতিক ক্রীড়া সংগঠন এবং সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মগুলোকে দায়িত্ব নিয়ে বিদ্বেষমূলক মন্তব্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া।
আরও আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের ওয়েবসাইটে।
নিয়মিত বাংলা সংবাদের আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন