৭ মে, ২০২৫, পহেলগাঁওয়ে নির্মম জঙ্গি হামলার ১৫ দিনের মধ্যেই শক্তিশালী জবাব দিল ভারত। মধ্যরাতে চালানো এক গোপন সামরিক অভিযানে পাকিস্তানের ভিতরে ঢুকে ন’টি জঙ্গি ঘাঁটিতে সফলভাবে হামলা চালিয়েছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। সেনাবাহিনীর দাবি, একাধিক জঙ্গিঘাঁটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এই অভিযানের কোডনেম দেওয়া হয়েছে ‘অপারেশন সিঁদুর’।
কী হয়েছিল পহেলগাঁওয়ে?
দুই সপ্তাহ আগে জম্মু-কাশ্মীরের পহেলগাঁও এলাকায় এক ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় একাধিক ভারতীয় সেনা শহিদ হন। সবচেয়ে মর্মান্তিক দিক ছিল, ওই জওয়ানদের স্ত্রীর সামনে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এই বর্বরতার পর সারা দেশে শোক ও ক্ষোভের আবহ তৈরি হয়।

অপারেশন সিঁদুর: কৌশল ও বাস্তবায়ন
সেনাবাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, মধ্যরাতে একযোগে পাকিস্তানের ন’টি অঞ্চলে এয়ার স্ট্রাইক এবং স্পেশাল ফোর্স অপারেশন চালানো হয়। লক্ষ্য ছিল জইশ-ই-মহম্মদ ও লস্কর-ই-তৈবার ঘাঁটি। অপারেশন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং সকল বাহিনী নিরাপদে ফিরে এসেছে।
এই অভিযানের সময় সরাসরি তত্ত্বাবধান করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেনাবাহিনীর সূত্র অনুযায়ী, ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামটিও মোদীরই দেওয়া। কারণ, এই নামটি সেই স্ত্রীদের প্রতীক, যাঁরা তাঁদের স্বামীদের হারিয়েছেন।
মন্ত্রিসভা ও রাষ্ট্রপতির প্রতিক্রিয়া
অভিযানের পরে প্রধানমন্ত্রী মোদী জরুরি ভিত্তিতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠক ডাকেন। বৈঠকে সর্বসম্মতভাবে ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রশংসা করে প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। বৈঠক শেষে মোদী রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এবং পুরো অপারেশনের খুঁটিনাটি তাঁকে অবহিত করেন।
সর্বদল বৈঠক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় কেন্দ্রীয় সরকার সর্বদল বৈঠক ডেকেছে ‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে। এই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী মোদী উপস্থিত থাকেন কি না, তা নিয়ে কৌতূহল রয়েছে, কারণ পহেলগাঁও হামলার পরে হওয়া বৈঠকে তিনি ছিলেন না। সে সময় তিনি বিহারের মধুবনীতে এক রাজনৈতিক সভায় ছিলেন, যার কারণে বিরোধীদের কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়।
উপসংহার
‘অপারেশন সিঁদুর’ শুধু একটি সামরিক অভিযান নয়, বরং এটি একটি বার্তা—ভারত এখন আর আঘাত সহ্য করে চুপ করে বসে থাকবে না। প্রত্যাঘাতই হবে নতুন নীতি। এই অপারেশনের সাফল্য ভারতের প্রতিরক্ষা নীতির দৃঢ়তা, সেনার ক্ষমতা ও কূটনৈতিক কৌশলের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
নিয়মিত বাংলা সংবাদের আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন