কলকাতা:1960 সালে করাচিতে স্বাক্ষরিত ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে ঐতিহাসিক সিন্ধু জল বন্টন চুক্তি বহু আগেই বাতিল করেছে ভারত। এই সিদ্ধান্তে কার্যত বিপাকে পড়েছে পাকিস্তান, যার কৃষি ও অর্থনীতি এই জলনির্ভর ব্যবস্থার উপর নির্ভরশীল। পাকিস্তানের বর্তমান রাজনৈতিক ও অভ্যন্তরীণ অস্থিরতার মাঝে ভারতের এই পদক্ষেপ তাদের জন্য একপ্রকার চূড়ান্ত ধাক্কা।
বিশ্ব ব্যাঙ্ক জানাল, “ভারতের সিদ্ধান্তে হস্তক্ষেপ নয়”
চুক্তিটি বিশ্ব ব্যাঙ্কের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত হলেও, তাদের প্রেসিডেন্ট অজয় বঙ্গ স্পষ্ট জানিয়েছেন— “আমাদের ভূমিকাটি ছিল শুধুমাত্র একটি সহায়ক ও মধ্যস্থতাকারীর। ভারতের সিদ্ধান্তে আমাদের হস্তক্ষেপ করার অধিকার বা ক্ষমতা নেই।” অর্থাৎ ভারত যদি এই চুক্তি থেকে সরে দাঁড়ায়, তাতে বিশ্ব ব্যাঙ্ক কিছুই করতে পারবে না।

জঙ্গি হানার পর চুক্তি বাতিল, পরমাণু হুমকির মাঝেও অটল ভারত
কাশ্মীরে পাক মদতপুষ্ট জঙ্গিদের হাতে ২৬ জন নিরীহ ভারতীয় নাগরিক নিহত হওয়ার পরই ভারত কূটনৈতিকভাবে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করে। এই ঘটনার পর পাকিস্তানের সঙ্গে একাধিক ক্ষেত্রে সম্পর্ক ছিন্ন করার পাশাপাশি বাতিল করা হয় সিন্ধু জলচুক্তি। দিল্লির এমন সিদ্ধান্তের পর পাকিস্তানের পক্ষ থেকে পারমাণবিক যুদ্ধের হুমকিও আসে, কিন্তু ভারত নিজেদের অবস্থানে অনড় থেকে জানিয়ে দেয়, সন্ত্রাসের আশ্রয়দাতাদের সাথে কোনও রকম চুক্তির স্থান নেই।
পাকিস্তানে জলসংকট ও কৃষিক্ষেত্রে ভয়াবহ প্রভাব
সিন্ধু নদ ও এর উপনদীগুলির জল পাকিস্তানের প্রধান কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির মূল ভিত্তি। কিন্তু ভারতের জল সরবরাহ বন্ধ করার ফলে পশ্চিম দিকের দেশে শুরু হয়েছে জলসংকট। আন্তর্জাতিক একাধিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতের এই সিদ্ধান্তের ফলে পাকিস্তানের কৃষি উৎপাদনে মারাত্মক প্রভাব পড়ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, দেশটির জিডিপির ২০ শতাংশেরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণ:
ভারতের এই জলনৈতিক (water diplomacy) পদক্ষেপ কেবল পাকিস্তানকে চাপে ফেলেনি, বরং আন্তর্জাতিক মহলেও ভারতের আত্মবিশ্বাসী অবস্থানকে তুলে ধরেছে। বিশ্ব ব্যাঙ্কের সরে থাকা অবস্থানও ইঙ্গিত দেয় যে, এই সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিক আইনত প্রশ্নবিদ্ধ নয়।
নিয়মিত বাংলা সংবাদের আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন