কলকাতা: ভারতীয় রেলে কর্মরত লোকো পাইলট (Train Drivers) এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট লোকো পাইলটদের জন্য এবার কেন্দ্রীয় সরকার আনতে চলেছে এক কড়া নির্দেশিকা। সম্প্রতি রেল মন্ত্রকের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, ট্রেন চালানোর সময় ব্যক্তিগত মোবাইল ফোন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রাখতে হবে। কেবলমাত্র অফিসিয়াল ফোন ব্যবহারই অনুমোদিত, তাও শুধুমাত্র জরুরি বা দুর্ঘটনাজনিত পরিস্থিতিতে।
কি বলছে রেল মন্ত্রকের নির্দেশিকা?
- ডিউটির সময় ব্যক্তিগত ফোন বন্ধ রাখতে হবে
- শুধুমাত্র অফিসিয়াল ফোন চালু রাখা যাবে
- ফোন ব্যবহার ধরা পড়লে শাস্তির মুখে পড়তে পারেন ট্রেন চালক ও সহ-চালক
- অফিসিয়াল ফোনে আসা কলের কল লগ হঠাৎ চেক হতে পারে
- পার্সোনাল ফোন থাকলে জানাতে হবে নম্বর ও সার্ভিস প্রোভাইডারের নাম
রেল মন্ত্রক জানিয়েছে, যাত্রীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই এমন কড়া সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অতীতে বহুবার দেখা গিয়েছে, ডিউটির সময় ফোনে মনোযোগ দিলে সিগন্যাল মিস করে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ে।

নির্দেশিকা ঘিরে ক্ষোভ, রেলকর্মীদের মধ্যে আন্দোলনের হুমকি
এই নির্দেশিকাকে ঘিরে ইতিমধ্যেই অসন্তোষ ছড়িয়েছে ট্রেন চালকদের সর্বভারতীয় সংগঠনের মধ্যে। তাঁদের অভিযোগ, কর্তব্যরত অবস্থায় ‘মিল ব্রেক’ না নেওয়া, ‘নেচারস কল’ না মানা, এখন আবার ব্যক্তিগত ফোনও বন্ধ রাখার নির্দেশ— এইসব মানেই ট্রেন চালকদের একপ্রকার “নিয়ন্ত্রণে” রাখা।
অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, “চাকরি করছি না কি স্কুলে ভর্তি হয়েছি?“
অন্যদিকে রেল বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, এই সিদ্ধান্তটি যাত্রী সুরক্ষার দিক থেকে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ এবং সময়োপযোগী। তাঁদের মতে, “এক মুহূর্তের অসতর্কতা বড় দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে। তাই এই পদক্ষেপ কার্যকরী হলে ভালো ফল মিলবে।”
এখনও সরকারি ঘোষণা বাকি, কিন্তু বিতর্ক তুঙ্গে
যদিও এই নির্দেশিকা এখনও সরকারিভাবে পুরোপুরি কার্যকর হয়নি। তবে রেল সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী, খুব শীঘ্রই কেন্দ্র সরকার এ বিষয়ে চূড়ান্ত নোটিশ জারি করতে চলেছে। এর আগে ৪ এপ্রিলের বিজ্ঞপ্তিতে ‘মিল ব্রেক’ না নেওয়ার নির্দেশকে কেন্দ্র করে চরম বিতর্ক শুরু হয়। এবার ফোন সংক্রান্ত নির্দেশিকাও বিতর্কের আগুনে ঘি ঢেলেছে।
উপসংহার:
রেলের সাম্প্রতিক নির্দেশিকাগুলি ট্রেন চালকদের মধ্যে মানসিক চাপ এবং অসন্তোষ বাড়াচ্ছে বলে মনে করছে কর্মী সংগঠনগুলি। অন্যদিকে প্রশাসনের যুক্তি— একটাই অসতর্ক মুহূর্তে হাজারো প্রাণের বিপদ, তাই ট্র্যাকের নিরাপত্তায় কোনও ছাড় নয়।
এখন দেখার বিষয়, রেল কর্তৃপক্ষ শেষমেশ সহানুভূতিশীল দৃষ্টিভঙ্গিতে সিদ্ধান্ত নেয়, নাকি নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে নিয়ম কার্যকর করে।
নিয়মিত বাংলা সংবাদের আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন