হিসার, ২২ মে: পাকিস্তানের সঙ্গে গুপ্তচর সংযোগের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া হরিয়ানার ইউটিউবার জ্যোতি মলহোত্রার পুলিশ হেফাজতের সময়সীমা আরও চার দিন বাড়ানো হয়েছে। ফলে আগামী ২৫ মে পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতেই থাকতে হবে তাঁকে। বুধবার হিসার জেলা আদালতে পেশ করার পর আদালত এই নির্দেশ দেয়।
পাকিস্তানি গোয়েন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ, তবে সন্ত্রাসের যোগ মেলেনি
হিসার পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা ISI-এর কিছু এজেন্টের সঙ্গে জ্যোতির যোগাযোগ ছিল। তবে, এখনো পর্যন্ত কোনও জঙ্গি গোষ্ঠীর সঙ্গে তাঁর সরাসরি যোগসূত্র বা সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে অংশগ্রহণের প্রমাণ মেলেনি। পুলিশের ভাষায়, “জ্যোতি পাক এজেন্টদের সঙ্গে সচেতন ভাবেই যোগাযোগ রাখতেন, তবে সেনা সংক্রান্ত গোপন তথ্য জানতেন বা কোনও জঙ্গি পরিকল্পনার অংশ ছিলেন— এমন কোনও প্রমাণ এখনও পর্যন্ত নেই।”
বাজেয়াপ্ত ডিভাইস, তদন্তের আওতায় ডিজিটাল প্রমাণ
পুলিশ জানায়, জ্যোতির তিনটি মোবাইল, একটি ল্যাপটপ ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক গ্যাজেট বাজেয়াপ্ত করে ফরেন্সিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া তথাকথিত ‘ডায়েরি’ প্রসঙ্গে পুলিশ জানায়, এমন কোনও নথি তাদের হাতে নেই। ফলে সেই ডায়েরির বাস্তবতা নিয়েও সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে।

ডিজিটাল ট্রেসে পাক সংযোগ, ধোঁয়াশায় কিছু নাম
তদন্তকারীদের দাবি, জ্যোতির সোশ্যাল মিডিয়া কনটেন্ট ছিল সাজানো ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এগুলির মাধ্যমে আসল সত্যকে আড়াল করে পাকিস্তানি এজেন্টদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করা হতো। তদন্তে উঠে এসেছে, ২০২৩ সাল থেকে তিনি একাধিক পাকিস্তানি নাগরিকের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন এবং ওই সময় পাকিস্তান সফরও করেন।
জানা গিয়েছে, পাকিস্তান হাই কমিশনের আধিকারিক এহসান দার ওরফে ‘দানিশ’-এর সঙ্গে তাঁর আলাপ ছিল। আরেকটি নাম উঠে এসেছে— ‘জাট রনধাওয়া’। কিন্তু তদন্তকারীরা এখনও পর্যন্ত সেই নামে কোনও বাস্তব অস্তিত্ব খুঁজে পাননি। ফলে এই পরিচয় নিয়েও ধোঁয়াশা রয়ে গিয়েছে।
তদন্ত জারি, নজরে আরও তথ্য
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জ্যোতির বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে তদন্ত চলছে, এবং তাঁর ডিজিটাল footprint থেকে আরও তথ্য উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই ফরেন্সিক রিপোর্ট ও আরও জিজ্ঞাসাবাদে অনেক কিছু স্পষ্ট হবে বলে মনে করছে পুলিশ।
উল্লেখযোগ্য যে, জ্যোতি মলহোত্রা সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পরিচিত মুখ ছিলেন। তাঁর ইউটিউব চ্যানেলে রাজনৈতিক ও সামাজিক বিষয় নিয়ে নানা ভিডিও প্রকাশ করতেন তিনি। তবে সেই ভিডিওগুলির অন্তরালে চলছিল আন্তর্জাতিক স্তরের সন্দেহজনক যোগাযোগ— এমনটাই বলছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলি।
তদন্তের আপডেটের জন্য নজর রাখুন আমাদের সঙ্গে।
নিয়মিত বাংলা সংবাদের আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন