নিজস্ব সংবাদদাতা – এক সময় যেখানে গ্রামের ছেলেমেয়েরা হাঁসের পেছনে ছুটত, বড়রা জাল ফেলে মাছ ধরত, কিংবা বর্ষার দিনে রাস্তার জল গিয়ে মিশত পুকুরে—আজ সেখানে চলছে অবিরাম মাটি ফেলা। নবদ্বীপের কুটিরপাড়ার পুরনো সেই পুকুরটি হারিয়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে, অবৈধভাবে ভরাটের জেরে।
এই পুকুর শুধুই জলাশয় ছিল না, ছিল গ্রামবাসীর জীবনের অংশ। এখন সেই পুকুরের পাড়ে দাঁড়িয়ে স্থানীয় প্রবীণ কল্যাণ মুখার্জি বলেন, “এই পুকুরে বর্ষার সমস্ত জল যেত। আজকে সেখানে প্রোমোটারের হাত পড়েছে। প্রশাসন যদি না চায়, আমরা কিছুই করতে পারি না।”
দু’টি ছোট্ট ছেলে শুক্রবার সকালে বলল, “এই পুকুরটা পরিষ্কার করলে আমরা সাঁতার শিখতে পারব। মাছ ধরাও করব। খুব ভালো লাগবে।” কিন্তু তাদের স্বপ্ন কাদার নিচে চাপা পড়ছে একেবারে চোখের সামনে।
পুকুর রক্ষায় প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে। স্থানীয় কাউন্সিলরও চান ভরাট বন্ধ হোক, অথচ কেউ জানে না কারা এই কাজ করছে। রাতের অন্ধকারে শুরু হচ্ছে মাটি ফেলা, পুকুরে ট্রাক্টর না ঢুকতে পারলেও মাথায় করে মাটি নিয়ে আসছে শ্রমিকরা। যেন এক নিঃশব্দ প্রাকৃতিক হত্যাকাণ্ড।
ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবু প্রশ্ন থেকে যায়—যে সমাজে পুকুরের মত এক ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে, সেখানে মানুষ কীভাবে প্রকৃতিকে ভালোবাসবে? শুধু গাছ লাগানো আর শ্লোগান তুলেই কি রক্ষা করা যাবে পরিবেশ?
আরও আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের ওয়েবসাইটে।
নিয়মিত বাংলা সংবাদের আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন