কলকাতা: আপনি কি রেশন কার্ডধারী? রেশনে মাসে মাসে কেরোসিন তেল পান? তাহলে আপনার জন্য রয়েছে জরুরি খবর। কেরোসিন বিতরণ নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। বাংলা-সহ একাধিক রাজ্যকে কেন্দ্রের পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক থেকে পাঠানো হয়েছে নির্দেশিকা। সেই নির্দেশিকা অনুযায়ী, কেরোসিন তেল বিতরণে কড়াকড়ি ও নতুন বরাদ্দ নীতি চালু করা হচ্ছে।
কী বলছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রকের নির্দেশিকা?
পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক রাজ্যগুলোর মুখ্যসচিবদের চিঠি পাঠিয়ে জানিয়ে দিয়েছে—
- কেরোসিন তেল দূষণ সৃষ্টি ও জনস্বাস্থ্যহানির কারণ, তাই ভবিষ্যতে রেশনে কেরোসিন দেওয়ার পক্ষপাতী নয় কেন্দ্র।
- ২০১১ সাল থেকেই কেন্দ্র ধীরে ধীরে কেরোসিনের ব্যবহার কমানোর নীতিতে কাজ করছে।
- বর্তমানে বহু ঘরেই উজ্জ্বলা যোজনার গ্যাস সংযোগ রয়েছে, তাই বিকল্প জ্বালানির ব্যবহারে জোর দেওয়া হচ্ছে।

কেন্দ্রের নতুন বরাদ্দ ফর্মুলা কী?
নতুন নীতিমতে, আগামীতে যেসব রাজ্য রেশনে কেরোসিন পেতে চায়, তাদের বরাদ্দ নির্ধারিত হবে এক বিশেষ নিয়মে:
- যে রাজ্য গত তিন অর্থবর্ষে সর্বাধিক পরিমাণে কেরোসিন তুলেছে, সেটিই হবে সেই রাজ্যের বরাদ্দের ভিত্তি।
- পরবর্তী দুই অর্থবর্ষেও একই ফর্মুলা প্রযোজ্য হবে।
এই নিয়মে বাংলার বরাদ্দ কতটা কমে যাবে, তা নিয়েই এখন চিন্তিত রাজ্য সরকার।
পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি ও আশঙ্কা:
- পশ্চিমবঙ্গ সরকার এখনো পুরনো বরাদ্দ বজায় রাখার পক্ষপাতী।
- কিন্তু ইতিমধ্যেই গত কয়েক বছরে বাংলার কেরোসিন বরাদ্দ ক্রমশ কমিয়ে আনা হয়েছে।
- আশঙ্কা করা হচ্ছে, নতুন নীতির ফলে আগামী দিনে আরও কম বরাদ্দ পাবে বাংলা।
কে পাবে আর কে পাবে না?
- ইতিমধ্যেই ২০টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল স্বেচ্ছায় রেশনের কেরোসিন বরাদ্দ ছেড়ে দিয়েছে।
- তবে পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ঝাড়খণ্ড, ছত্তিশগড়ের মতো রাজ্য এখনো বরাদ্দ চায়।
- ফলে নতুন নীতির সবচেয়ে বেশি প্রভাব এইসব রাজ্যের গরিব মানুষের উপর পড়বে।
উপসংহার:
কেরোসিন বিতরণ নিয়ে কেন্দ্রের নতুন নীতিতে স্পষ্ট, কেন্দ্র চাইছে গ্যাস এবং বিদ্যুৎ-ভিত্তিক বিকল্প ব্যবহারে মানুষ অভ্যস্ত হোক। তবে দারিদ্রসীমার নিচে থাকা বহু মানুষের কাছে কেরোসিন এখনো অপরিহার্য। সেক্ষেত্রে এই নীতির বাস্তব প্রভাব কতটা মানবিক বা সংকটজনক হয়, তা দেখার অপেক্ষায় দেশ।
নিয়মিত বাংলা সংবাদের আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন