নিজস্ব সংবাদদাতা – ক্রিকেট খেলাকে কেন্দ্র করে শুরু হওয়া বিরোধ কীভাবে শিলিগুড়ির বাগরাকোট অঞ্চলে ভয়াবহ সংঘর্ষে রূপ নিল, তা বুধবারের ঘটনা ফের প্রমাণ করল। ছোট্ট একটি খেলার ভুল বোঝাবুঝি ধীরে ধীরে রাজনৈতিক রঙ নিতে শুরু করে, আর তার পরিণতি রক্তাক্ত সংঘর্ষে গড়ায়।
ঘটনার সূত্রপাত গত ২৯ জুন, একটি ক্রিকেট টুর্নামেন্টে। মাঠের গন্ডগোল গড়ায় ব্যক্তিগত শত্রুতায়, যার জেরে ২৮ নম্বর ওয়ার্ডের এক কিশোরের উপর নৃশংস হামলার অভিযোগ ওঠে। এরপর থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ এবং রাতের বেলায় গ্রেপ্তারি ঘটনার মোড় ঘুরিয়ে দেয়। মঙ্গলবার রাতে পুলিশ অভিযুক্তদের আটক করতেই প্রতিবাদে ফেটে পড়েন ২০ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দারা। পাশে দাঁড়ান বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ।
বুধবার বিধায়ক এলাকা ত্যাগ করতেই পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠে। সংঘর্ষ শুরু হয় তিন ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের মধ্যে। রেললাইন চত্বরে রীতিমতো লাঠিসোটা, পাথর নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে উভয় পক্ষ। আহত হন একাধিক মানুষ, ভাঙচুর চলে বেশ কিছু গাড়িতে। পুলিশ ও র্যাফ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাঠিচার্জ করে ও কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সংঘর্ষের ফলে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়—চারটি যাত্রীবাহী ট্রেন আটকে পড়ে স্টেশনে। রেল কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে বাগরাকোট স্টেশন হয়ে চলাচল বন্ধ করে দেয়।
এই ঘটনা শিলিগুড়ির সামাজিক ও প্রশাসনিক ভারসাম্য নিয়ে এক গভীর প্রশ্ন তোলে। একটি খেলা কীভাবে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে রূপ নেয় এবং জনজীবনে বিপর্যয় নামিয়ে আনে, তার বাস্তব উদাহরণ হয়ে উঠল বাগরাকোট সংঘর্ষ।
পুলিশ কমিশনার সি সুধাকর জানিয়েছেন, “ক্রিকেট খেলার সময়ের ঝামেলাই এই সংঘর্ষের সূত্র। নতুন করে যাতে কিছু না ঘটে, তার জন্য এলাকা জুড়ে কড়া পুলিশি পিকেটিং রাখা হয়েছে।”
আরও আপডেট পেতে চোখ রাখুন আমাদের ওয়েবসাইটে।
নিয়মিত বাংলা সংবাদের আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন