আগামী বিধানসভা নির্বাচন সামনে রেখে জনহিতকর উদ্যোগে জোর দিচ্ছে রাজ্য সরকার, সহজ-সরল অ্যাপ পঞ্চায়েত স্তরে টাকা ছাড়ার প্রক্রিয়াকে করবে আরও দ্রুত ও স্বচ্ছ।
কলকাতা, ২৬ মে ২০২৫:
বছর ঘুরলেই রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। তার আগেই জনমানুষের আস্থা অর্জন করতে কোমর বেঁধে নেমেছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। সেই সঙ্গে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকেও নেওয়া হচ্ছে একের পর এক জনহিতকর পদক্ষেপ। এই পরিপ্রেক্ষিতে পঞ্চায়েত দপ্তর আনতে চলেছে এক আধুনিক মোবাইল অ্যাপ – সহজ সরল অ্যাপ, যা পঞ্চায়েত স্তরে উন্নয়নমূলক কাজের অর্থ ছাড়ের প্রক্রিয়াকে করবে আরও সহজ, দ্রুত ও স্বচ্ছ।
পেছনের প্রেক্ষাপট: পুরনো পদ্ধতিতে দুর্নীতির অভিযোগ
এর আগে গ্রাম পঞ্চায়েত পর্যায়ে ব্যবহৃত হতো GPMS এবং পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ স্তরে ব্যবহৃত হতো IFMS-Saral সিস্টেম। কিন্তু ওই ব্যবস্থায় সময়মতো লেনদেনের তথ্য আপডেট না হওয়ায় একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে।
এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর চলতি বছরের ১ এপ্রিল চালু করে এক সমন্বিত ডিজিটাল পোর্টাল ‘সহজ সরল’, যার লক্ষ্য ছিল সমস্ত স্তরে আর্থিক স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা।

নতুন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে কাজের গতি
এবার আরও এক ধাপ এগিয়ে সেই পোর্টালের জন্য আনা হচ্ছে একটি মোবাইল অ্যাপ। এই অ্যাপের মাধ্যমে গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ স্তরের আধিকারিকরা—যেমন পঞ্চায়েত প্রধান, বিডিও, এবং জেলা শাসকরা—প্রকল্পের টাকা ছাড়ার অনুমোদন দিতে পারবেন অফিস ছাড়াও, কোনও সময় বা স্থান-নির্বিশেষে।
এই উদ্যোগে যেমন সময় বাঁচবে, তেমনি সরকারি ছুটি বা গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ের কারণে আর উন্নয়নের কাজ আটকে থাকবে না।
নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও এসওপি (SOP)
যেহেতু অ্যাপটির মাধ্যমে আর্থিক লেনদেন সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ সরকারি কাজ হবে, তাই দুর্নীতি রুখতে রাজ্য সরকার সতর্ক।
রাজ্য ইতিমধ্যে সমস্ত জেলায় পাঠিয়েছে একটি Standard Operating Procedure (SOP)। ওই নির্দেশিকা অনুযায়ী, শুধুমাত্র নির্ধারিত মোবাইল নম্বরের মাধ্যমে প্রাপ্ত ওটিপি ব্যবহার করেই অ্যাপে লগ ইন করা যাবে। এর ফলে প্রতিটি ছাড়পত্রের কার্যকলাপ ট্র্যাক করা যাবে এবং আধিকারিকরাও বুঝতে পারবেন কোন প্রকল্পের পেমেন্ট এখনও অনুমোদিত হয়নি।
উপসংহার:
রাজ্য সরকারের এই সহজ সরল অ্যাপ শুধু প্রযুক্তিগত দিক থেকেই নয়, প্রশাসনিক দক্ষতার দিক থেকেও এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। একদিকে স্বচ্ছতা, অন্যদিকে কাজের গতি—এই দুই দিককে মাথায় রেখেই রাজ্য সরকার ডিজিটাল পদ্ধতিকে আরও জোরদার করতে চাইছে। আগামী নির্বাচনের আগে এই ধরনের পদক্ষেপ যে রাজনৈতিকভাবে তাৎপর্যপূর্ণ, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।
নিয়মিত বাংলা সংবাদের আপডেট পেতে আমাদের ফলো করুন