সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়—চার সপ্তাহের মধ্যে রাজ্য সরকারকে বকেয়া ডিএ’র অন্তত ২৫ শতাংশ মেটাতে হবে

Spread the love

কলকাতা, ১৬ মে:
বকেয়া মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মচারীদের দীর্ঘদিনের টানাপোড়েন অবশেষে সুপ্রিম কোর্টের এক ঐতিহাসিক রায়ে এক নতুন মোড় নিল। সর্বোচ্চ আদালত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, রাজ্য সরকারকে আগামী চার সপ্তাহের মধ্যেই তাদের কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ’র অন্তত ২৫ শতাংশ পরিশোধ করতেই হবে।

এই রায় সামনে আসতেই রাজ্য সরকারি কর্মচারী ও পেনশনভোগীদের মধ্যে একপ্রকার স্বস্তি ও আশার সঞ্চার হয়েছে। বহুদিন ধরেই বকেয়া ডিএ’র দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন তাঁরা। তবে প্রশ্ন উঠছে, আদৌ কি রাজ্য সরকার এই রায় কার্যকর করবে?

রাজ্য সরকারের প্রতিক্রিয়া

এ বিষয়ে অর্থ প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানিয়েছেন, “সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা আমরা এখনও হাতে পাইনি। নির্দেশিকা হাতে পাওয়ার পর সরকারিভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।” অর্থাৎ, এখনো পর্যন্ত রাজ্য সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই বলেনি। এ নিয়ে প্রশাসনের উচ্চপদস্থ মহলেও চাপা উদ্বেগ বিরাজ করছে।

সুপ্রিম কোর্টে কী ঘটল?

আজকের শুনানিতে রাজ্য সরকারের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টে সওয়াল করেন বিশিষ্ট আইনজীবী অভিষেক মনু সিংভি। তিনি আদালতে বলেন, বকেয়া ডিএ’র ২৫ শতাংশ দিতে গেলে রাজ্যের প্রায় ১০,০০০ কোটি টাকা ব্যয় হবে, যা বর্তমান আর্থিক অবস্থায় বহন করা সম্ভব নয়। তবে সুপ্রিম কোর্ট রাজ্যের এই যুক্তিকে গুরুত্ব না দিয়ে কড়া বার্তা দেয়।

অন্যদিকে, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের পক্ষে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য আদালতে জানান, ডিএ যদিও মৌলিক অধিকার নয়, সংবিধানের ৩০৯ নম্বর ধারা অনুযায়ী তৈরি রোপা রুল অনুযায়ী এটি একটি আইনসিদ্ধ দাবি। তাঁর দাবি অনুযায়ী, ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এই বকেয়া ডিএ প্রাপ্য এবং তা সেই সময় থেকেই মেটাতে হবে।

বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্যের কটাক্ষ

আদালতের রায় প্রকাশের পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “আদালত তো বলেছিল ৫০ শতাংশ ডিএ দিতে হবে। এখন অন্তত ২৫ শতাংশ দেওয়ার নির্দেশ এসেছে। সরকার বলছে তারা পারবে না। আমি বলি, এই সরকারের কোমর বহু আগেই ভেঙে গিয়েছে।”

পরিসংখ্যান ও ভবিষ্যৎ

বর্তমানে রাজ্যের কয়েক লক্ষ সরকারি কর্মচারী, শিক্ষক ও পেনশনভোগীরা বকেয়া ডিএ পাওয়ার জন্য আন্দোলনে শামিল। সুপ্রিম কোর্টের রায় তাঁদের আন্দোলনে নতুন প্রেরণা যোগালেও, সরকারের নিরুত্তর অবস্থান নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। আদালতের নির্দেশ কতটা কার্যকর হবে, তা আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই পরিষ্কার হবে।

এই রায় নিঃসন্দেহে এক নতুন দিশা দেখালেও, বাস্তবে তার বাস্তবায়নই বলে দেবে কর্মচারীদের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান হবে কিনা। সময়ই এর সঠিক উত্তর দেবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

বিশ্বধারা – সত্যের সন্ধানে, আপনার সাথে


বিশ্বধারা - সত্যের সন্ধানে অবিচল,

আপনার বিশ্বস্ত সঙ্গী। পশ্চিমবঙ্গ ও বাইরের নিরপেক্ষ সংবাদে আমরা নিবেদিত। স্বচ্ছতা ও নির্ভুলতাই আমাদের মূল ভিত্তি। আমাদের সাথে থাকুন, সঠিক তথ্য জানুন।

This will close in 11 seconds